This Article is From Sep 21, 2018

পুজোর আগে ছাড়ানো যাবে না কাজ থেকে- পোস্টারে দাবি তুলেছেন বাংলার গৃহ পরিচারিকারা

পশ্চিমবঙ্গের লেবার কমিশনের কাছে দেওয়া ডেপুটেশনে এই সমিতির সদস্যরা জানিয়েছেন, বোনাস হিসেবে অন্তত একমাসের মাইনে তাঁদের দিতেই হবে, কাজ ছাড়ানোর পরে অন্তত একমাসের মাইনে থেকে বঞ্চিত করা যাবে না তাঁদের।

পুজোর আগে ছাড়ানো যাবে না কাজ থেকে- পোস্টারে দাবি তুলেছেন বাংলার গৃহ পরিচারিকারা

ছবি সৌজন্য: Paschimbanga Grihaparicharika Kalyan Samiti

কলকাতা:
57u7o8v

পোস্টার লাগাচ্ছেন পশ্চিমবঙ্গ গৃহপরিচারিকা সমিতির সদস্য

“কাজের মেয়ে চাইলে বোনাস লুটছো তাঁকে অনর্গল, পুজোর আগে তোমায়ও লোটে ঝাঁ চকচকে শপিং মল।” বেশ কয়েকদিন ধরেই এরকম একটি পোস্টার ছেয়ে গিয়েছে কলকাতা, উত্তর ও দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা, হাওড়া, হুগলির বেশ কিছু এলাকায়। “তোমায় আর রাখব না”, “পুজোয় শাড়ি চাইবি না কিন্তু, আর আসতে হবে না”, “ আমি আজই বলে দেব, আর রাখব না ওঁকে”- পুজোর আগে নানা পাড়ায় নানা বাড়িতে কান পাতলেই শোনা যায় গৃহকর্তা গৃহকর্ত্রীদের এমনই নানা হুমকি। পুজোর আগে এমন পরিকল্পনা থেকে থাকলে আগেভাগে সাবধান হয়ে যাওয়াই ভালো। গৃহপরিচারিকা ছাড়া সব বাড়িই অচল, অথচ কোনও পরিচারিকারই নির্দিষ্ট পারিশ্রমিক বা তাঁর কাজের নির্দিষ্ট কোনও চুক্তি নেই। অসংগঠিত এই শ্রমিকরা যাতে বঞ্চিত না হন সেই জন্যই তৈরি হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ গৃহপরিচারিকা কল্যাণ সমিতি (Paschimbanga Grihaparicharika Kalyan Samiti)। সংগঠনের পক্ষ থেকে মুনমুন বিশ্বাস বলেন, “কেন্দ্রের ‘ন্যাশনাল পলিসি অন ডোমেস্টিক ওয়ার্কার’ (National Policy On Domestic Workers) বহুদিন ধরেই রয়েছে, অথচ তার কোনও প্রয়োগ নেই। ফলত অসংগঠিত এই শ্রমিকদের, যাঁদের বেশির ভাগই মহিলা তাঁদের কোনও নির্দিষ্ট আয় যেমন নেই, নেই কাজের নিশ্চয়তাও।”

nr8qn5p8

সমিতির প্রচারে

মুনমুন জানান, তাঁদের মূল দাবি হল এই গৃহপরিচারিকাদের নির্দিষ্ট বেতন কাঠামোয় নিয়ে আসতে হবে। তাঁদের কাজের নির্দিষ্ট চুক্তি থাকতে হবে। হঠাৎ চাইলেই কেউ চাকরি থেকে সরিয়ে দিতে পারবেন না। চাকরি থেকে সরাতে হলে উভয় পক্ষকেই, কমপক্ষে একমাসের নোটিশ দিয়ে কাজ ছাড়তে বা ছাড়াতে হবে। বিশেষ করে পুজোর সময় দেখা যায় পুজোর বোনাস আর পুজোর শাড়ি দিতে হবে বলে অনেকেই পুজোর এক দু’মাস আগে কাজ থেকে ছাড়িয়ে দেন পরিচারিকাদের। পশ্চিমবঙ্গের লেবার কমিশনের কাছে দেওয়া ডেপুটেশনে এই সমিতির সদস্যরা জানিয়েছেন, বোনাস হিসেবে অন্তত একমাসের মাইনে তাঁদের দিতেই হবে, কাজ ছাড়ানোর পরে অন্তত একমাসের মাইনে থেকে বঞ্চিত করা যাবে না তাঁদের।

চার পাঁচটি জেলা মিলে অন্তত পাঁচশো গৃহ পরিচারিকা এই সমিতির সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। বাসন্তী ওঁরাও, মাফুজা বিবি, সুককলি শিকারী, শোভা, অপর্ণারা দলে দলে যোগও দেন সমিতির বিভিন্ন সভা ও ডেপুটেশনে, নিজেদের দাবি দাওার কথা পোস্টার বানিয়ে দেওয়ালে দেওয়ালে ছড়িয়ে দেন। মুনমুনের কথায়, বিভিন্ন ক্ষেত্রেই আমরা অহেতুক পয়সা খরচ করি। বাড়িতে ওয়াশিং মেশিন বা মিক্সি থাকলেও তা ব্যবহার করতে দেওয়া হয় না পরিচারিকাদের। একটা নির্দিষ্ট বয়সের পর শারীরিক ক্ষমতা চলে গেলে অর্থনৈতিকভাবে মারাত্মক সমস্যায় পড়েন তাঁরা। বিভিন্ন বাড়িতেই নিজেদের শৌচাগার ব্যবহার করতে দেওয়া হয় না পরিচারিকাদের, সামান্য টাকা থেকে শুরু করে গয়না হারালেই অভিযোগ ওঠে পরিচারিকাদের দিকেই। এমনকি যৌন হেনস্থার ঘটনাও আকছার। “এই ধরণের ঘটনায় বেশ কিছু পরিচারিকা যেমন দোষী, তেমন এটাও ঠিক যে অধিকাংশ অভিযোগই স্রেফ সন্দেহের বশে। অসংগঠিত, দরিদ্র এই শ্রমিকদের অভিযগ নিতে চায় না পুলিশও”, বলেন মুনমুন।

নিজেদের দাবি দাওয়া নিয়ে সরব হওয়ার জন্য এই পরিচারিকাদের সঙ্গে নিয়মিত কাজ করে চলেছে পশ্চিমবঙ্গ গৃহপরিচারিকা সমিতি। বাকি কর্মক্ষেত্রের মতোই গৃহপরিচারিকাদের ট্রেড ইউনিয়ন গড়ার দিকেই এগোতে ইচ্ছুক তাঁরা।  

Click for more trending news


.