পশ্চিমবঙ্গ পঞ্চায়েত নির্বাচন ফলাফল 2018 (West Bengal Panchayat Election)
কলকাতা:
সম্পূর্ণ পঞ্চায়েত নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশিত, কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কলকাতায় বলেন, তাঁর দলের বিরুদ্ধে বিভিন্ন রকম অভিযোগ ওঠা সত্ত্বেও তৃণমূল কংগ্রেস রাজ্যের গ্রামাঞ্চলের শতকরা 90 ভাগ আসন জিতেছে।তিনি অভিযোগ করেছেন যে, 'পঞ্চায়েত নির্বাচনকে ঘিরে যে সন্ত্রাসের সৃষ্টি হয়েছিল তাতে তাঁর দলের 10 জন ব্যক্তি মারা যায়, আর এই খুন করে বিজেপির সমর্থকরা।' তারপর তিনি বলেন, ''কিন্তু জনগণ আমাদের সাথেই আছে।''
গতকালের কিছু ঘটে এখানে তুলে দেওয়া হল।
. উত্তর দিনাজপুর: চোপড়াতে নির্বাচন গণনা কেন্দ্রের সীমারেখা ভেঙে তৃণমূল সমর্থকরা প্রবেশ করে ফেললো।
. বীরভূম: পঞ্চায়েত ভোটের গণনা চলছে, এবং সেখানকার গণনা কেন্দ্রের বাইরে বিজেপি আর তৃণমূল সমর্থকদের মধ্যে গন্ডগোল বাঁধে। পুলিশবাহিনী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে।
. বিজেপি এবং সিপিআই(এম) এখনো অবধি 386 আর 94টি সিটে জয়লাভ করেছে। নির্বাচন কমিশনের অফিসার এখনো অবধি এই তথ্য প্রদান করেছে।
. দুপুর 12টা অবধি তৃণমূল কংগ্রেস 2400টি সিটে জয়লাভ করেছে। নিবার্চনী অফিসাররা এখনো অবধি এই হিসেব প্রদান করেছে।
. উত্তর ২৪ পরগণা: উত্তরবঙ্গের 6 জেলাতেই এই মুহূর্তে এগিয়ে আছে তৃণমূল কংগ্র্রেস
. পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় 3040টি গ্রাম পঞ্চায়েত সিটের ফলাফল প্রকাশিত। (তৃণমূল -132 , বিজেপি- 17, সিপিআইএম- 3 আর নির্দল- 12)
. জলপাইগুড়ি(পশ্চিমবঙ্গ): উত্তর বঙ্গের 6 জেলাতেই এই মুহূর্তে তৃণমূল জয়ের লক্ষ্যে এগিয়ে আছে। ইতিমধ্যে সমর্থকরা উল্লাস উন্মাদনা শুরু করে দিয়েছে।
. মোট 31,814টি সিটের মধ্যে এখনো অবধি তৃণমূল মোট 110টি সিটে জয়লাভ করেছে এবং 1,208টি সিটে এগিয়ে আছে, বিজেপি এখনো অবধি 4টি সিটে জয়লাভ করেছে এবং 81টি সিটে এগিয়ে আছে, যেখানে সিপিআই(এম) এখনো অবধি 3টি সিটে জয়লাভ করেছে এবং 58টি সিটে এগিয়ে কাছে। গণনা এখনো চলছে।
. কোচবিহারের পলিটেকনিক নির্বাচন কেন্দ্রে 40 টি ফোন বাজেয়াপ্ত করা হলো
. এই মুহূর্তে প্রতিটি নির্বাচন কেন্দ্রের বাইরে কড়া নিরাপত্তা নেওয়া হয়েছে
. উত্তর বঙ্গের 6 জেলায় পরপর গণনার কাজ শুরু হয়েছে
. উত্তর 24 পরগণায় গণনার কাজ শুরু হতে একটু বিলম্ব হয়
পঞ্চায়েত ভোট উপলক্ষ্যে আটটার সময় ব্যালট ভোট শুরু হওয়ার পরই হিংসা আর সন্ত্রাস গত সোমবার 20 জনকে মৃত্যুদণ্ড দেয়। প্রধানমন্ত্রী যথেষ্ট কেতাবাজির সাথে জানিয়ে ছিলেন হিংসা দিয়ে নির্বাচন জয়, উভয়ই নির্বাচন আর রাজনৈতিকরূপে আদতে গণতন্ত্রকে খুন করার সমান। আর সেই মতকেই খন্ডন করে তৃণমূল জানিয়েছে, কর্ণাটকে প্রধানমন্ত্রীর আঙ্গুর ফল টক প্রমান হয়েছে।
গত বুধবার বেঙ্গালুরুতে ঠিক যেই ঘটনাটি ঘটলো, সেই দেখে এখন গোটা সমীকরণটাই প্রায় বদলে যেতে বসেছে। কারণ নির্বাচনের ফলাফলের অতিনাটকীয় চিত্রনাট্যের মতন টানাপোড়েনের পর কর্ণাটকের রাজ্যপাল বিজেপিকে রাজ্য সরকার গঠনের জন্য আমন্ত্রণ জানায়।
উত্তর দিনাজপুরের এক দল পোল অফিসাররা ইতিমধ্যে জানিয়ে দিয়ে ছিল পূর্ণ নিরাপত্তা না দিতে পারলে তারা আজ তাদের কাজ বয়কট করবে।
তারা রায়গঞ্জে 34 নম্বর জাতীয় সড়কে এই দাবী জানিয়ে কয়েক ঘন্টা রাস্তা অবরোধ অবধি করে। রায়গঞ্জের রেল লাইনের ট্রাকে প্রিসাইডিং অফিসারের মৃত দেহ পাওয়ার পরই অফিসাররা এই দাবী জানিয়ে রাস্তায় নামে। পুলিশ এই ঘটনাকে আত্মহত্যা বলে সন্দেহ করলেও বাকি অফিসাররা সেটা মানতে নারাজ।
রাজ্য নির্বাচন কমিশন ইতিমধ্যে ঘোষণা করে দেয় যে, ভোটের সম্পূর্ণ ফলাফল না আসা অবধি কোনো রাজনৈতিক দল রাস্তায় বিজয় মিছিল নিয়ে নামতে পারবে না। কিন্তু বেলা গড়ানোর সাথে সবুজ সমর্থকরা ঠিক বিজয় মিছিল নিয়ে আনন্দ করতে শুরু করে। রাজ্যের প্রচুর স্থানে আজ একযোগে পঞ্চায়েত ভোটের গণনা চলে। এবং সেই এলাকার 200 মিটারের মধ্যে সাধারণের প্রবেশ থাকে নিষিদ্ধ।
38,529টি সিটের জন্য প্রায় 1.15 লক্ষ প্রার্থী এই ভোটে দাঁড়িয়ে ছিলেন এবং প্রায় 5 কোটি মানুষ তাদের ভাগ্য নির্ধারণ করে। কিন্তু এর মধ্যে প্রায় রেকর্ড সংখ্যক 34 শতাংশ সিটই ক্ষমতায় থাকা তৃণমূল কংগ্রেস বিনা প্রতিপক্ষের জন্য আগে থেকেই জয় লাভ করেছে।
সবাই ভেবেছিল, 2019 এর আগে এটাই বাংলার শেষ ভোট পর্ব, যেটার ফলাফল অনেক বড় হাওয়া বদল করে দিতে পারে। অনেকের মতে,এই মুহূর্তে রাজ্যে তৃণমূলের শক্তি অনেক বেশি হলেও ধীরে ধীরে বিজেপিও নিজেদের অস্ত্রের ধার বৃদ্ধি করছে। কিন্তু আজকের ফলাফল আবার পরিবর্তনের দিকে বইতে পারলো না।