ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর লোকজন অবাক চোখে তাঁঁকে দেখছে বলেও জানান ওই বিধায়ক
হাইলাইটস
- মৃত্যুর পর মানুষ যাতে তাঁকে স্মরণ করেন তাই নিজের মূর্তি গড়ালেন বিধায়ক
- গোসাবার তৃণমূল বিধায়ক জয়ন্ত নস্কর এই আজব ঘটনা ঘটিয়েছেন
- যে কোনও দিন খুন হয়ে যেতে পারেন তিনি, আশঙ্কা ওই বিধায়কের
কলকাতা: "জন্মিলে মরিতে হবে, অমর কে কোথা কবে", কবি মধুসূদন দত্তের এই কথাগুলো আমরা প্রায় প্রত্যেকেই জানি, কিন্তু মনে মনে অমর হওয়ার ইচ্ছা অনেকেরই থাকে। অন্তত মৃত্যুর পর প্রতিনিয়ত মানুষজন মনে করবে, এমন ইচ্ছা হৃদয়ে পোষণ করেন না এমন মানুষ হাতে গোনা। এবার মানুষের মনে অমর থাকার ইচ্ছায় নিজের মূর্তি গড়ে ফেললেন গোসাবার (West Bengal) তৃণমূল বিধায়ক জয়ন্ত নস্কর। নেতা-মন্ত্রীরা মারা গেলে অনেকসময়ই তাঁর (Jayanta Naskar) স্মরণে মূর্তি গড়া হয়, কিন্তু তাঁর অনুপস্থিতিতে কে কীভাবে স্মরণ করবেন সেই অনিশ্চয়তায় না গিয়ে নিজের একটি নয়, তিন-তিনটি মূর্তি গড়ালেন ওই বিধায়ক (TMC MLA)। ইচ্ছা, তাঁর প্রয়াণের পর ওই মূর্তিগুলি দেখেই তাঁকে স্মরণ করবেন এলাকার মানুষ। যে কোনও দিন খুন হয়ে যেতে পারেন তিনি, তাই গোসাবার ওই তৃণমূল বিধায়ক কুমারটুলি থেকে ভাস্কর ভাড়া করে নিয়ে গিয়ে তাঁকে দিয়েই নিজের ৩টি মূর্তি (Statues and Busts) গড়িয়েছেন। আপাতত নিজের বাসভবনেই মাটির তৈরি তাঁর একটি আবক্ষ মূর্তি আর দুটি ফাইবার গ্লাসের পূর্ণাবয়ব মূর্তি রেখেছেন বিধায়ক জয়ন্ত নস্কর।
পুরভোট কবে! ১৬ মার্চ সর্বদলীয় বৈঠক ডাকল নির্বাচন কমিশন
"৪ জন অপরাধী আলিপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনগার থেকে পালিয়ে গেছে। তাদের ধরার পরে তারা স্বীকার করেছিল যে আমাকে হত্যা করার জন্যেই তাদের স্থানীয় কোনও রাজনীতিবিদ নিয়োগ করেছিল। সেই সময় জেলা পুলিশ সুপারের দায়িত্বে থাকা প্রবীন ত্রিপাঠি আমাকে কথাগুলো জানিয়ে সতর্ক করে দিয়েছিলেন। রাজ্য সরকারও আমার নিরাপত্তা ব্যবস্থা বাড়িয়ে ওয়াই ক্যাটাগরি করে দিয়েছে", জানান ওই তৃণমূল বিধায়ক। জয়ন্ত নস্করকে বর্তমানে ১১ জন পুলিশ কর্মী নিরাপত্তা দেয়।
"আমি তখনই আমার মূর্তিগুলো তৈরির সিদ্ধান্ত নিই যাতে আমায় হত্যা করা হলে এই মূর্তিগুলি মানুষকে আমার কথা মনে করিয়ে দেবে", সংবাদসংস্থা পিটিআইকে বলেন তৃণমূল বিধায়ক জয়ন্ত নস্কর। "নিজে বেঁচে থাকাকালীন শিল্পীর সামনে বসে যেভাবে নিখুঁত মূর্তি তৈরি করা যাবে, মারা গেলে তা ঠিক নাও হতে পারে। তাই এখনই এই মূর্তিগুলি বানিয়ে রাখলাম", বলেন ওই বিধায়ক।
করোনার পর এবার সোয়াইন ফ্লু, এ রাজ্যে আক্রান্ত ১৩
তবে ওই রাজনীতিবিদ একথাও বুঝতে পারেন যে, মূর্তি তৈরি করে রাখার কথা জানাজানি হওয়ার পর লোকজন অবাক চোখে তাঁঁকে দেখে। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, "এই মূর্তিগুলি কয়েক বছর আগেই তৈরি করা হয়েছে তবে সেগুলি সম্পর্কে কেউ জানত না এতদিন, ওইগুলো আমার বাড়ির নিচতলার একটি ঘরে রাখা ছিল। পার্টির সাম্প্রতিক এক গণ-কর্মসূচির সময় কিছু মানুষজন আমার বাড়িতে এসে মূর্তিগুলো দেখতে পায় এবং বেশ কয়েকটি ছবিও তোলে। আমি বুঝতে পারি যে লোকজন আমার সম্বন্ধে অদ্ভুত কিছু ভাবছে"।
মূর্তিগুলি কোথায় বসানো হবে জানতে চাওয়া হলে জয়ন্ত নস্কর জানান, স্থানীয় একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষক প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যে মৃত্যুর পরে ওই স্কুলেই তাঁর আবক্ষ মূর্তিটি স্থাপন করা হবে। "অন্য দুটোর সম্পর্কে আমার কোনও ধারণা নেই। স্থানীয় মানুষজন চাইলে নিজেদের পছন্দ মতো জায়গায় মূর্তিদুটো বসাবে", বলেন তিনি।
যদিও এই মূর্তি সম্বন্ধে তাঁর কোনও ধারণা নেই বলে জানিয়েছেন দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি শওকত মোল্লা। "আমি এই ধরণের ঘটনা কখনও শুনিনি। এটা এমন কোনও ব্যক্তির কাজ যাঁর কোনও বুদ্ধি নেই। এটা দারুণ মজার", কটাক্ষ করে বলেন তিনি।