West Bengal: এ রাজ্যের নারীরা দেশের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে ভুলতে বসেছেন, বলেন দিলীপ ঘোষ (ফাইল চিত্র)
হাইলাইটস
- বাংলার মহিলাদের মাদক সেবন করিয়ে আন্দোলনে নামানো হচ্ছে
- বিতর্কিত মন্তব্য করলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ
- রবীন্দ্র ভারতী কাণ্ড প্রসঙ্গে মন্তব্য করতে গিয়েই ওই কথা বলেন তিনি
কলকাতা: রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে বসন্ত উৎসব উপলক্ষে বিতর্কিত কাণ্ডের প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে এবার আরও আপত্তিকর মন্তব্য করে বসলেন বিজেপির (BJP) রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। পশ্চিমবঙ্গে নারীদের মাদক খাইয়ে প্রতিবাদ আন্দোলনে নামানো হচ্ছে, যে কোনও মুহূর্তে তাঁরা হিংসার শিকার হতে পারেন, বললেন তিনি (Dilip Ghosh)। আন্তর্জাতিক নারী দিবসে (Women's Day) বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষের এই মন্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। রাজ্যের শাসক দলের নেতা তথা মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম রাজ্যের (West Bengal) মানুষের উদ্দেশে দিলীপ ঘোষকে বয়কটের ডাক দিয়েছেন। বসন্তোৎসব চলাকালীন রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে যেভাবে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা গান নিয়ে অশ্লীল কাণ্ড ঘটানো হয়েছে সেই নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে দিলীপ ঘোষ নিন্দার সুরে বলেন, "রাজ্যের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য নষ্ট হচ্ছে। এখানকার মহিলারা আমাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে ভুলে যাচ্ছেন। তাঁদের মাদক দ্রব্য দিয়ে বিপথে চালনা করা হচ্ছে, ওই সব নেশার ওষুধের প্রভাবে তাঁরা সারা দিন ধরে চিৎকার করেন। এ কেমন বাংলা"।
সীমা অতিক্রম করছে রাজ্য সরকার, উপাচার্যের ইস্তফাপত্র খারিজ হওয়া নিয়ে বললেন রাজ্যপাল
দিলীপ ঘোষ বলেন, "অল্পবয়সী মেয়েরা এই ধরনের অশালীন ব্যবহার করছে, প্রচার করছে। এই ঘটনা খুবই দুর্ভাগ্যজনক। আমি কাউকে দোষ দিচ্ছি না। এটা আসলে সমাজের অবক্ষয়।" তারপরেই এই প্রসঙ্গে রাজ্যে হওয়া সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন বিরোধী আন্দোলনের প্রসঙ্গে তুলে তিনি বলেন, ‘"কিছুদিন ধরে রাজ্য জুড়ে বিধ্বংসী আন্দোলন চলছে, আসলে রাজ্যের মহিলাদের মাদক খাইয়ে আন্দোলনে নামানো হচ্ছে। তার পরিণামে তাঁরা আমাদের সংস্কার ভুলে গেছেন, ভালো-মন্দ ভুলে গেছেন। নিজের মান-সম্মানের কথা ভুলে গেছেন"। তাঁদের ঠিক পথে চালিত করার দায়িত্ব অভিভাবক, স্কুল–কলেজ কর্তৃপক্ষ, সহ সমাজের সবারই, এমন কথা মনে করিয়ে দিয়ে তিনি রাজ্যের মহিলাদের সতর্ক করে দিয়ে বলেন, "এই মহিলারাই যখন রাস্তায় বেরোবেন, তখন তাঁদের সঙ্গে লোকেরা কী ব্যবহার করবে ভেবে দেখেছেন? তাঁরা তো হেনস্থার শিকার হবেনই"।
তবে রবীন্দ্র ভারতী কাণ্ডের জন্যে বিশেষভাবে কাউকে দোষ দিতে রাজি হননি দিলীপ ঘোষ। বিজেপির রাজ্য সভাপতি বলেন, "এই ঘটনা আসলে আমাদের সমাজের সম্মিলিত অবক্ষয়। প্রত্যেককে এই ঘটনার কারণ খুঁজে বের করার চেষ্টা করতে হবে"।
রবীন্দ্রভারতীর দোলে খোলা পিঠে আবিরে লেখা অপশব্দ, '...চাঁদ উঠেছিল গগনে' গানে নাচ!
দিলীপ ঘোষের এই ধরণের মন্তব্যের তীব্র সমালোচনা করেন ফিরহাদ হাকিম। পুর ও নগরোন্নয়নমন্ত্রী বলেন, এই ধরনের বর্বরোচিত কথা বলা মানুষকে রাজ্যের সব মানুষেরই বয়কট করা উচিত। ফিরহাদ বলেন, "উনি সভ্য সমাজে বাস করার অধিকার হারিয়েছেন। যেভাবে মেয়েদের সম্বন্ধে মাদক সেবনের কথা বলেছেন, তাতে উনি নিজেই ড্রাগ সেবন করেছেন কিনা সেই প্রশ্ন উঠছে"। পুরমন্ত্রী আরও বলেন, এধরনের মন্তব্য বাংলার কৃষ্টি–সংস্কৃতির পরিপূরক নয়। নাম না করে দিলীপ ঘোষের প্রতি তীব্র কটাক্ষের সুরে তিনি বলেন, "এরকম একজন উন্মাদ লোক, তিনি কিনা একটা দলের সভাপতি। তিনি নারী দিবসে মেয়েদের অপমান করছেন। মেয়েদের ড্রাগ নেওয়ার কথা বলছেন"। বিজেপি রাজ্য সভাপতির এই ধরনের মন্তব্য অন্যায় বলে মনে করেন পুর ও নগরোন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম।
বৃহস্পতিবার রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যলয়ে বসন্ত উৎসব পালনের সময়, শরীরে রবীন্দ্র সঙ্গীতের কলির সঙ্গে অশ্লীল শব্দ লিখে ঘুরতে দেখা যায় কয়েকজন যুবতীকে, যা সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক ভাইরাল হয়।