Delhi Police: পশ্চিম দিল্লিতে রবিবার সন্ধে ৭ টা থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত কমপক্ষে ৪৮১ টি প্যানিক কল এসেছে
হাইলাইটস
- আতঙ্কে ভুগছে দেশের রাজধানী দিল্লি
- সাম্প্রদায়িক হিংসা ছড়িয়ে পড়ছে এলাকায় এলাকায়, এই আতঙ্কে রয়েছেন মানুষ
- প্যানিক কলে ব্যতিব্যস্ত দিল্লি পুলিশ, মানুষকে গুজবে কান না দেওয়ার বার্তা
নয়া দিল্লি: দেখতে দেখতে এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেল দিল্লির হিংসা পরিস্থিতির। গত সপ্তাহের শুরুতে বিতর্কিত সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (CAA) নিয়ে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ ছড়ায়। ধীরে ধীরে সেই সংঘর্ষ চরম হিংসার রূপ নেয় এবং তার বলি হন বহু মানুষ। বর্তমানে রাজধানীর (Delhi) পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হলেও আতঙ্কের রেশ কাটিয়ে উঠতে পারেননি সেখানকার মানুষজন। দিল্লি (Delhi Police) পুলিশ এবং গোয়েন্দা সংস্থাগুলি গত ২৪ ঘণ্টায় তাঁদের কন্ট্রোল রুমে আসা অসংখ্য ফোন কল রিসিভ করেছে। তবে এই কলগুলির মধ্যে বেশিরভাগই অযথা আতঙ্ক থেকে করা হয়েছে। কেউ কেউ আবার ফোন করে ভুয়ো সাম্প্রদায়িক হিংসার খবরও দিয়েছে। এই ধরণের প্যানিক কল আসা নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছে একটি বিশেষ রিপোর্ট জমা দিয়েছে দিল্লি পুলিশ। গত সপ্তাহে উত্তর-পূর্ব দিল্লিতে সহিংসতার (Delhi Violence) ঘটনায় কমপক্ষে ৪৬ জন মারা গেছে এবং অসংখ্য মানুষ আহত হয়েছে, এখনও থমথমে গোটা এলাকা।
পশ্চিম দিল্লিতে রবিবার সন্ধে ৭ টা থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত কমপক্ষে ৪৮১ টি প্যানিক কল এসেছে বলে জানিয়েছে দিল্লি পুলিশ। এর মধ্যে বেশিরভাগ কলই এসেছে দিল্লির তিলক নগর এলাকা থেকে, সেখান থেকে মোট ১৪৮ টি কল আসে, এছাড়াও খায়লা থানার সীমান্ত এলাকা থেকে ফোন কল এসেছে ১৪৩ টি, বিশ্লেষণ করে দেখেছে পুলিশ কন্ট্রোল রুম।
দিল্লিতে অশান্তির খবরে আতঙ্ক, গুজবে কান দেবেন না, বার্তা পুলিশের
রাজৌরি গার্ডেন (৯৬), পাঞ্জাবী বাগ (২৬), হরি নগর (২৪), মোতি নগর (১৭) এবং জনকপুরী (১১) এর মতো অন্যান্য অঞ্চল থেকেও আতঙ্কের ফলে ফোন করা হয়েছে পুলিশকে।
সমস্ত ফোন কলেই দাবি করা হয়েছে যে তাঁদের এলাকায় সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা রয়েছে, নিরাপত্তা দিক দিল্লি পুলিশ।
এই প্রসঙ্গে একজন প্রবীণ পুলিশকর্তা বলেন, "বহু মানুষ বোগাস ফোন কল করতে শুরু করেছেন। দেখে মনে হচ্ছে আতঙ্ক যেন গোটা শহরকে গ্রাস করেছে"। তিনি আরও জানান, দিল্লির খায়লার স্থানীয় বাজারে পুলিশ যখন একটি জুয়া চক্রকে ধরতে অভিযান চালায় তখনও স্থানীয় মানুষজন সাম্প্রদায়িক হিংসা হয়েছে বলে আতঙ্কে ভুগতে থাকেন।
"সেখানে উপস্থিত লোকেরা দৌড়াদৌড়ি শুরু করে, যা এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করে। কেউ কেউ আবার এই কথাও ছড়িয়ে দেয় যে পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়েছে। কিছু চ্যানেল আবার একথাও প্রচার করে যে জুয়াড়িরা পুলিশকে লক্ষ্য করে পাথর ছুঁড়েছে। কিন্তু এই ধরণের প্রচারের কোনওটাই সত্যি নয়", জানান ওই পুলিশকর্তা।
এর আগে রবিবার পশ্চিম ও দক্ষিণপূর্ব দিল্লিতে কোনও অশান্তি নেই বলে মানুষকে আশ্বস্ত করে দিল্লি পুলিশ, সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া গুজবে কান না দেওয়ারও আহ্বান জানান তাঁরা। নাগরিকত্ব আইন নিয়ে দিল্লিতে অশান্তি ছড়িয়ে পড়লে তার জেরে হওয়া সংঘর্ষে এখনও পর্যন্ত ৪৬ জনের মৃত্যু হয়েছে, আহতের সংখ্যা শতাধিক। ফলে আতঙ্কগ্রস্ত দিল্লির সাধারণ মানুষ। এই পরিস্থিতিতে দিল্লি পুলিশের তরফে এক ট্যুইট বার্তায় বলা হয় যে, “সোশ্যাল মিডিয়ায় দক্ষিণ পূর্ব ও পশ্চিম দিল্লিতে উত্তেজনার কিছু ভুয়ো খবর ঘুরছে। জানানো হচ্ছে যে, এগুলি সবই গুজব। এই ধরণের গুজবে কান দেবেন না। গুজব যাতে না ছড়ায় সেদিকে নজর রয়েছে পুলিশের, যাঁরা এই ধরণের গুজব ছড়াচ্ছে তাঁদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে”।.
দেশের শান্তি বজায় রাখতে "যে কোনও ভূমিকা" নিতে প্রস্তুত, বললেন রজনীকান্ত
পুলিশের দাবি অনুযায়ী শুধু ভুয়ো ফোন কলই করা হচ্ছে তা নয়, বিভ্রান্তি আরও বাড়িয়ে দিতে কিছু ভুয়ো সংঘর্ষের বার্তা ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে হোয়াটসঅ্যাপেও ।
"দয়া করে মনে রাখবেন যে ইন্টারনেটের মাধ্যমে এই জাতীয় গুজব ছড়ানোর ফলে সাম্প্রদায়িক হিংসাকে উস্কে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে, এর ফলে মারাত্মক পরিণতি হতে পারে ... এবং গুরুতর অপরাধের সঙ্গে যারা জড়িত তাঁদের খুঁজে বের করে শাস্তি দেওয়া হবে, দিল্লি পুলিশ টুইট করে একথাও জানিয়েছে।