দলীয় সভায় সাংবাদিকদের উদ্দেশ্য করে কপালে জোড়হাত ঠেকান নীতিশ কুমার
হাইলাইটস
- এদিন দলীয় এক সভায় সাংবাদিকদের উদ্দেশ্য করে রেগে গিয়ে হাত জোড় করেন নীতিশ
- ওরা কাজ কম, কথা বেশি বলছেন, এটাই তাঁর অভিযোগ
- সাংবাদিকদের বিহারে কী কাজ হচ্ছে, সে নিয়ে খবর করতে আবেদন জানান নীতিশ কুমার
পাটনা: শুক্রবার জেডিইউ'র এক অনুষ্ঠানে রেগে গিয়ে সাংবাদিকদের সামনে হাত জোড় করলেন নীতিশ কুমার (Nitish Kumar)। কিন্তু তার এই রাগ বহিঃপ্রকাশের কারণ কি? জানা গেছে, দিন দুয়েক আগে নীতিশ ঘনিষ্ঠ জেডিইউ (JDU) নেতা পবন ভার্মা বিহারের মুখ্যমন্ত্রীর এক গোপন চিঠি ফাঁস করেছিলেন। সেই চিঠিতে, জেডিইউ শরিক বিজেপির (BJP) ওপর ক্ষোভ উগড়ে দলীয় নেতৃত্বকে লিখেছিলেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী। তার মধ্যেই সংবাদ মাধ্যম সে চিঠি নিয়ে হইচই শুরু করেছে। এই 'অতি সক্রিয়তা' দেখে নীতিশ কুমারের মনে হয়েছে 'কাজ কম, কথা বেশি বলছেন সাংবাদিকরা।' তাই এদিনের অনুষ্ঠান থেকে কপালে হাত ঠেকিয়ে নিজের ক্ষোভ উগড়ে দিলেন জেডিইউ প্রধান তথা বিহারের মুখ্যমন্ত্রী (Bihar CM)। দলীয় সূত্রে শুক্রবার এমন দাবি করা হয়েছে।
এদিন তিনি অত্যন্ত পিছিয়ে পড়া শ্রেণীর জন্য একাধিক প্রকল্প উদ্বোধন করেন। বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কর্পূরী ঠাকুরের জন্মবার্ষিকী উদযাপনে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন। সেখানেই প্রকল্প উদ্বোধন সেরে নীতিশ কুমার বলেন, "এখানে কিছু মানুষ আছেন, যারা কেবল কথা বলেন।" এই বলেই কপালে জোড়হাত ঠেকান তিনি। তারপর আবার বলেন, "এখানে উপস্থিত ভদ্রলোকরা মানুষ যা বলে, সেটাই ছাপায় । দেখুন আমার এসব নিয়ে কোনও সমস্যা নেই। কারণ আমি কাজে মনোনিবেশ করি।"
কেন তাঁর ত্বক চকচকে, ফাঁস করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি
জেডিইউ-এর সাধারণ সম্পাদক পবন ভার্মা দিন দুয়েক আগে মুখ্যমন্ত্রী তথা দলের সুপ্রিমোর সেই চিঠি প্রকাশ্যে আনেন। শরিক বিজেপি প্রসঙ্গে নিজের অবস্থান স্থির করুক নীতিশ কুমার, এমন চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছিলেন ওই নেতা। সে প্রসঙ্গে শুক্রবার সকালে নীতিশ কুমার স্পষ্ট করেছেন পবন ভার্মাকে কোনও জবাব তিনি দেবেন না। তাঁর কটাক্ষ ছিল, এটা সেই চিঠি? কাউকে না জানিয়ে ই-মেল করা আর সংবাদমাধ্যমের কাছে সোজা চলে যাওয়া, আমার কাছে এর কোনও ভিত্তি নেই।
CAA লাগুর পর থেকে এ দেশ থেকে বাংলাদেশে ফিরছে বহু অনুপ্রবেশকারী: বিএসএফ
এরপর ফের সেই অনুষ্ঠানে প্রসঙ্গে বলতে শুরু করেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী। বক্তব্য শেষ করে তিনি আবার জোড় হাতে সাংবাদিকদের বলেন, "অনুগ্রহ নিজের রাজ্যের দিকে নজর দিন। এখানে কী কাজ হচ্ছে আর তার কি প্রভাব সেটা ভেবে দেখুন।" মূলত বিহার সরকারের নেওয়া একাধিক জনকল্যাণমুখী প্রকল্পকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেছেন, দেখুন ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ, পানীয় জল, এই দুটি মানুষের খুব উপকারে এসেছে। এ নিয়ে খবর প্রকাশ করতে সাংবাদিকদের আবেদন করেন তিনি।
ইতিমধ্যে দেশব্যাপী সিএএ, এনআরসি-র বিরোধিতা করে নাগরিক সমাজ পথে নামলেও, বিহারের মুখ্যমন্ত্রীর থেকে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে তাঁর স্নেহভাজন তথা জেডিইউ নেতা প্রশান্ত কিশোর ক্রমাগত বিজেপিকে আক্রমণ করে গিয়েছেন। চলতি বছরের বিহার বিধানসভা নির্বাচনে অনেক বেশি আসনে লড়তে চায় জেডিইউ, এমনটাও ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছেন তিনি।
যদিও বিহারে জেডিইউ শরিক বিজেপি সেই দাবি খারিজ করে বলেছে, আসন সমঝোতা দুই দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব বসে ঠিক করবে। প্রশান্ত কিশোর সব ব্যাপারে কেন নাক গলাচ্ছেন, বিহার বিজেপির তরফে এমন প্রশ্নও তোলা হয়েছিল।