This Article is From Feb 27, 2019

বালাকোটের জঙ্গি ঘাঁটিতে হানার সময় 'মিরাজ'-কে 'পথ' দেখিয়েছিল কোন বিমান, জেনে নিন

১২’টি মিরাজ ২০০০ যুদ্ধবিমান যখন পাকিস্তানের বালাকোটে জইশ-ই-মহম্মদের ঘাঁটি গুঁড়িয়ে দেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে, সেই সময় সেটিকে নির্দেশ দিচ্ছিল ভারতে তৈরি আরেকটি বিমান।

বালাকোটের জঙ্গি ঘাঁটিতে হানার সময় 'মিরাজ'-কে 'পথ' দেখিয়েছিল কোন বিমান, জেনে নিন

এই সেই নেত্র বিমান

নিউ দিল্লি:

মঙ্গলবার ভোর সাড়ে তিনটের সময় পাকিস্তানের নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে আরও ৮০ কিলোমিটার ভিতরে ঢুকে ভারতীয় বায়ুসেনার ১২'টি মিরাজ ২০০০ যুদ্ধবিমান যখন পাকিস্তানের বালাকোটে জইশ-ই-মহম্মদের ঘাঁটি গুঁড়িয়ে দেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে, সেই সময় সেটিকে নির্দেশ দিচ্ছিল ভারতে তৈরি আরেকটি বিমান। যার পোশাকি নাম- নেত্র। ‘নেত্র', অর্থাৎ ‘চোখ'। যার মূল কাজ হল নজরদারি চালানো অত্যন্ত সুচারুভাবে। জম্মু ও কাশ্মীরের পুলওয়ামায় গত ১৪ ফেব্রুয়ারি আত্মঘাতী জঙ্গি হানায় শহিদ হন ৪০ জনেরও বেশি সিআরপিএফ জওয়ান। ওই হানার দায় স্বীকার করে নেয় পাক জঙ্গি সংগঠন জইশ-ই-মহম্মদ। ভারতে তৈরি এই বিশেষ বিমান নেত্র-র আরও একটি উল্লেখযোগ্য ক্ষমতা রয়েছে।

সেটি হল, কোনও মিসাইল যদি ধেয়ে আসে, তবে তা ইনফ্রারেড রশ্মির সাহায্যে অনেক আগে থেকেই বুঝে যেতে পারে। ওই ইনফ্রারেড রশ্মি মিসাইলের চারপাশে থাকা আগুনে বাতাবরণটিকে সহজেই সনাক্ত করে ফেলতে সক্ষম।

একেবারে ঘরে তৈরি বৈদ্যুতিন যন্ত্রপাতি ও হার্ডওয়্যার দিয়ে প্রস্তুত এই নেত্র-র মূল কাজই হল ভারতীয় বায়ু সেনাকে কোনও বিপদের আগাম সংকেত দেওয়া। এছাড়া, কোথাও আক্রমণ করার আগে সংশ্লিষ্ট এলাকাটির ‘চরিত্র'টিও ভালো করে জরিপ করে নেওয়া। ডিফেন্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (ডিআরডিও)-এর দ্বারা তৈরি হয়েছিল এই বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ বিমানটির নকশা।

ভারতে এই বিমানটি সুষ্ঠুভাবে প্রস্তুত করে ঠিকঠাক পরিচালনার মূল দায়িত্ব ছিল বেঙ্গালুরু এক সংস্থার ওপর। যার নেতৃত্বে রয়েছে প্রাক্তন ডিআরডিও প্রধান এস ক্রিস্টোফার।

ডিআরডিও সূত্রে জানানো হয়, শত্রুপক্ষের ৪৫০ কিলোমিটার থেকে ৫০০ কিলোমিটার পর্যন্ত এলাকায় না ঢুকেই সম্পূর্ণ জরিপ করে নিতে পারে ‘নেত্র'। সনাক্ত করতে পারে রাডার সিগন্যালকে। যার ফলে শত্রুপক্ষের সেনাশিবিরে কী নিয়ে আলোচনা চলছে, তাও ধরা পড়ে যাবে ‘নেত্র'-র কাছে। কোনও সক্রিয় ক্যামেরা এই বিমানটিতে লাগানো নেই। অথচ, যে যে ইলেকট্রনিক্স যন্ত্রপাতিগুলি রয়েছে এতে, তার মাধ্যমেই স্থলে থাকা সেনার কাছে সহজেই পৌঁছে যাবে সমস্ত তথ্য।

ভারতীয় বায়ুসেনার হাতে এই মুহূর্তে দুটি নেত্র বিমান রয়েছে। তৃতীয়টি এখনও সম্পূর্ণ তৈরি হয়নি। সেটি তৈরি করার কাজেই আপাতত নিমজ্জিত ডিআরডিও কর্মীরা।

২০০৭ সালে নেত্র বিমান প্রস্তুতকার্য শুরু হয়। তখন খরচ পড়েছিল ২ হাজার ৪৬০ কোটি টাকা। ১০ বছর সময় লাগে পুরোটা প্রস্তুত হতে। ২০১৭ সালে তা ভারতীয় বায়ুসেনার হাতে আসে।

একবারে টানা পাঁচঘন্টা উড়তে পারে নেত্র বিমান। এছাড়া, এয়ার-টু-এয়ার রিফুয়েলিং-এর ফলে টানা ন'ঘন্টা আকাশে ভাসতে পারে এটি। এছাড়া, স্যাটেলাইটের সাহায্য নিয়েও নিজের কাজটি করতে সক্ষম এই অত্যাধুনিক বিমানটি।

মঙ্গলবারের এয়ার স্ট্রাইকের পর স্পষ্টতই খুশি নেত্র-র প্রস্তুত কর্তা এস ক্রিস্টোফার। তিনি বললেন, এতদিনে নেত্র-র জন্য এত টাকা বিনিয়োগ দেশের কাজে এল। এর থেকে আনন্দের আর কিছুই হতে পারে না।

.