জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার মতো শচিন পাইলকেও রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী পদে বসায়নি হাইকমান্ড। (ফাইল ছবি)
নয়া দিল্লি: মধ্যপ্রদেশ-সঙ্কটে গত তিনদিন ধরে উত্তেজনা বাড়লেও, স্পিকটি নট ছিলেন রাজস্থানের উপ-মুখ্যমন্ত্রী শচিন পাইলট (Sachin Pilot)। কিন্তু নীরবতা ভেঙে বুধবার টুইটারে সরব হলেন তিনি। এদিন আবার সরকারি ভাবে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া (Jyotiraditya Scindia)। সেদিনই টুইটারে পাইলট লেখেন, "জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার কংগ্রেস ত্যাগ অত্যান্ত দুর্ভাগ্যজনক। আশা করেছিলাম একসঙ্গে বসে দূরত্ব ঘুচিয়ে নেওয়া সম্ভব হবে।" জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার পথেই কী হাঁটবে কংগ্রেসের অপর যুবমুখ শচিন পাইলট। সেই নিয়ে এখন চর্চা তুঙ্গে। তার মধ্যেই পাইলটের এই টুইট অঙ্কে জল্পনা জিইয়ে রাখল।
পড়ুন সেই টুইট:
এদিকে, জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া রাহুল গান্ধির সঙ্গে দেখা করতে চাইলেও অ্যাপয়েন্টমেন্ট মেলেনি। এমন অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে স্বয়ং রাহুল গান্ধি এদিন জানালেন, জ্যোতিরাদিত্যই একমাত্র কংগ্রেস নেতা ছিলেন, যিনি যে কোনও সময় তাঁর সঙ্গে দেখা করতে পারতেন। সংবাদ সংস্থা এএনআই-কে তিনি বলেন, ‘‘কংগ্রেসে ওই একমাত্র বন্ধু ছিল যে, যে কোনও সময় আমার বাড়িতে আসতে পারত।'' বুধবার কংগ্রেসের সঙ্গে ১৮ বছরের সম্পর্ক ত্যাগ করে গেরুয়া শিবিরে যোগ দেন জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া। তিনি জানিয়েছেন, কংগ্রেস আর সেই দল নেই, যেমনটা আগে ছিল। তাঁর দলবদলের আবহে যে গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে তা হল গান্ধি পরিবারের কেউই জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার সঙ্গে দেখা করতে চান না।
জ্যোতিরাদিত্যর তুতো ভাই ও ত্রিপুরার রাজ পরিবারের সদস্য প্রদ্যোৎ মাণিক্য দেববর্মা NDTV-কে মঙ্গলবার বলেন, ‘‘আমি জানি জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া রাহুল গান্ধির সঙ্গে দেখা করতে চাইছিলেন কয়েক মাস ধরে। কিন্তু কোনও অ্যাপয়েন্টমেন্ট পাওয়া যায়নি।''
“নয়া শুরু”, বিজেপিতে যোগ একসময়ে গান্ধি পরিবার ঘনিষ্ঠ জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার: ১০টি তথ্য
অপরদিকে, মঙ্গলবারই কংগ্রেস ছেড়েছেন জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া। তাঁর সঙ্গে চার্টার্ড ফ্লাইটে বেঙ্গালুরুতে পৌঁছন তাঁর অনুগামী ১০ জন বিধায়ক ও দু'জন মন্ত্রী। তাঁদের দাবি, তাঁরা বিজেপিতে যোগ দিতে ইচ্ছুক নন। সূত্রানুসারে তেমনটাইজেনেছে NDTV। বুধবারও সেই বিধায়করা জানিয়ে দিয়েছেন, ‘‘আমরা মহারাজের জন্য এসেছি... বিজেপিতে যোগ দিতে নয়।'' প্রসঙ্গত, কংগ্রেস সমর্থক ও কর্মীরা ‘মহারাজ' নামেই ডাকেন জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়াকে। জ্যোতিরাদিত্য-ঘনিষ্ঠ এই নেতারা গেরুয়া শিবিরে যোগ দেওয়ার ব্যাপারে কী ভাবছেন, সে ব্যাপারে বিজেপি নেতারা খেয়াল রাখছেন বলে সূত্রানুসারে জানা গিয়েছে।
১৫ মাস আগে মধ্যপ্রদেশে ক্ষমতায় এসেছে কংগ্রেস। তার মধ্যেই এতজন বিধায়ক নিয়ে জ্যোতিরাদিত্যের দলত্যাগ কংগ্রেসকে বিপদে ফেলে দিয়েছে। সব মিলিয়ে ছ'জন মন্ত্রী সহ ১৯ জন কংগ্রেস বিধায়ক বিজেপি শাসিত কর্নাটকের বেঙ্গালুরুতে পৌঁছন।
জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার সঙ্গে ১৮ বছরের সম্পর্ক কংগ্রেসের। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর সঙ্গে বৈঠকের পর তিনি এব্যাপারে পাকাপাকি সিদ্ধান্ত নেন তিনি। তাঁর সঙ্গে দল ত্যাগ করেন আরও ২১ জন কংগ্রেস বিধায়ক।