28 বছর বয়সী ওই মহিলা আত্মীয়র বাড়ির অনুষ্ঠানে খাবারে বিষ মিশিয়ে দেন বলে অভিযোগ।
রায়গড়:
তাঁর গায়ের কালো রং নিয়ে কেউ খোঁটা দিলে তিনি বিরক্ত হতেন। তাঁর রান্না নিয়ে উপহাস করলেও বিরক্ত হতেন প্রচণ্ড। এইভাবে দিনের পর দিন ধরে আত্মীয়দের কাছ থেকে উপহাস এবং ব্যঙ্গের শিকার হয়ে তিনি এক সময় ঠিক করেন, চরমপন্থা গ্রহণ করবেন। 28 বছর বয়সী সেই ভদ্রমহিলা গত সোমবার মহারাষ্ট্রের রায়গড় জেলায় এক আত্মীয়ের বাড়ির অনুষ্ঠানে গিয়ে খাবারে বিষ মিশিয়ে দেন। চারজন শিশু সহ ঘটনায় মারা যান মোট পাঁচজন। এছাড়া, আরও বাকি 120 জন অতিথি ওই খাবার খেয়ে ভয়াবহ অসুস্থ হয়ে পড়েন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
প্রজ্ঞা সুরভাসে নামের ওই গৃহবধূ তাঁর এক আত্মীয় সুভাষ মানের মাহাড় গ্রামের বাড়ির এক অনুষ্ঠানে গিয়ে খাবারে কীটনাশক ছড়িয়ে দেন। এমনকি শিশুরাও তাঁর হাত থেকে রক্ষা পায়নি। চারজন শিশু মারা যায় ওই খাবার খেয়ে।
নৈশভোজ শেষ করার পরেই সবারই প্রবল পেটে ব্যথা এবং বমি শুরু হয়। তাঁদের সঙ্গে সঙ্গেই বিভিন্ন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। মুম্বাই থেকে 75 কিলোমিটার দূরে অবস্থিত মাহাড় গ্রামের ওই ঘটনাস্থলে পুলিশ আসে তারপর। তারা জানতে পারে, একই সময় খেতে বসেছিল অসুস্থ হয়ে যাওয়া প্রত্যেকে। খাবারে কীটনাশক ছিল কি না, তা জানার জন্য, খাবারের নমুনা বিশ্লেষণের জন্য পাঠায় পুলিশ।
তদন্ত শুরু করার পর ওই আত্মীয়ের বাড়ির কাছ থেকে কীটনাশকের সন্ধান পায় পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয়। প্রজ্ঞা সুরভাসের উত্তরগুলো শুনে সন্দেহ হয় পুলিশের। সন্দেহ হওয়ায় আরও প্রবলভাবে জেরা শুরু হলে জেরার মুখে ভেঙে পড়েন তিনি। স্বীকার করে নেন, খাবারে বিষ মিশিয়ে ছিলেন তিনিই।
তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁর বিরূদ্ধে খুন, খুনের চেষ্টার মামলা এবং অন্যান্য অপরাধের জন্য মামলা দায়ের করা হয়েছে।
প্রজ্ঞা সুরভাসের বিয়ে হয়েছিল দু’বছর আগে। তাঁকে আত্মীয়স্বজনের কাছ থেকে গায়ের কালো রঙের জন্য সারাক্ষণ খোঁটা শুনতে হত। এছাড়া, তাঁর রান্না নিয়েও উপহাসের পাত্রী হতে হত যখনতখন। দীর্ঘদিনের সেই জমে থাকা ক্ষোভ থেকেই তিনি এই কাজ করেন বলে পুলিশ জানিয়েছে।