Uttar Pradesh: ওই যুবতী উন্নাওয়ে নিজের গ্রামেরই ২ ব্যক্তির বিরুদ্ধে প্রথম এফআইআর দায়ের করেন।
লখনউ: এক নিগৃহীতা তরুণীকে আদালতে যাওয়ার পথে গায়ে আগুন দিল অভিযুক্তরা। উত্তরপ্রদেশের উন্নাওয়ের বাসিন্দা ওই ২৩ বছরের তরুণী বৃহস্পতিবার আদালতে যাচ্ছিলেন তাঁর ধর্ষণ মামলার শুনানির জন্য। সেই সময়ই অভিযুক্তরা তাঁর গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তদের মধ্যে দু'জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে তাঁকে ধর্ষণের। ওই অবস্থাতেই সাহায্যের জন্য প্রায় এক কিলোমিটার পথ দৌড়তে থাকেন তরুণী। শেষ পর্যন্ত এক ব্যক্তি তাঁকে দেখতে পান ও পুলিশে খবর দেন। এদিন আদালতে যাওয়ার পথে গ্রামের বাইরে আসতেই তাঁকে ঘিরে ধরে অভিযুক্তরা। এবং তাঁর গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। তাঁকে ওই অবস্থায় দেখে ১১২ হেল্পলাইনে ফোন করেন সাহায্যকারী ব্যক্তি। এরপর ফোনটি স্পিকারে দিয়ে পুলিশের সঙ্গে ওই তরুণীর কথা বলার সুযোগ করে দেন তিনি।
তরুণীর শরীর ৯০ শতাংশ পুড়ে গিয়েছে। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাঁকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আকাশপথে দিল্লি উড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তারপর গ্রিন করিডর তৈরি করে বিমানবন্দর থেকে সফদরজং হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ১৮ মিনিটে ১৩ কিলোমিটার পথ যায় অ্যাম্বুল্যান্সটি।
তেলেঙ্গানার পশু চিকিৎসকের ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় ক্ষোভে ফুঁসছে গোটা দেশ। এই পরিস্থিতিতে আরও একটি নির্মম অপরাধের সাক্ষী হল দেশ। // ওই তরুণীর বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ রয়েছে যে দু'জনের বিরুদ্ধে তাদের মধ্যে একজন পলাতক। অন্যজন গত সপ্তাহে জামিন পেয়েছে।
বৃহস্পতিবারের ঘটনার সাক্ষী এক ব্যক্তি জানাচ্ছেন, ‘‘আমরা ওঁকে দেখলাম চিৎকার করতে করতে সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসতে। তাঁর সারা গায়ে আগুন জ্বলছিল।''
তাঁর দায়ের করা এফআইআরে ওই তরুণী জানিয়েছিলেন, ২০১৮ সালে এক তরুণের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক তৈরি হয়। তাঁদের মধ্যে শারীরিক সম্পর্কও ছিল। পরে সেই তরুণ তাঁকে বিয়ে করতে অস্বীকার করে। পরে সে তার এক বন্ধুকে নিয়ে এসে ওই তরুণীকে ধর্ষণ করে। এক অভিযুক্তকে জেলে পাঠানো হয়। গত ৩০ নভেম্বর সে জামিনে ছাড়া পায়।
উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ রাজ্য পুলিশের কাছে এ বিষয়ে তদন্তের রিপোর্ট জানতে চেয়েছেন। তিনি নিগৃহীতার চিকিৎসার জন্য খরচের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। রাজ্য সরকারের তরফে পুলিসের কাছে অভিযুক্তদের ‘‘সর্বোচ্চ শাস্তির'' জন্য পদক্ষেপ করার কথা জানানো হয়েছে।
উত্তরপ্রদেশের পুলিশ অধিকর্তা ওপি সিংহ NDTV-কে জানিয়েছেন, ‘‘আমাদের অগ্রাধিকার হল ওই তরুণীকে বাঁচানো।'' তিনি জানিয়েছেন, তিনি এই মামলা সম্পর্কে বিশদে জানবেন।
এদিকে ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়ঙ্কা গান্ধি উত্তরপ্রদেশ সরকারকে আক্রমণ করেন। তিনি বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মিথ্যে দাবি করেছেন, যে উত্তরপ্রদেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। এই ধরনের ঘটনা প্রতিনিয়ত ক্রোধের সঞ্চার করে। বিজেপি নেতাদের এই মিথ্যে প্রোপাগন্ডা ছড়ানো বন্ধ করা উচিত।''