সাধারণ দিনে গ্রামের মহিলারা দিনে দুইবার এই পথ অতিক্রম করে প্রায় 20 লিটার জল সংগ্রহ করে আনেন।
সনভদ্র, ইউপি:
প্রতি সকালে জল সংগ্রহের জন্য 70 বছর বয়সী বিফনি দেবীর সংগ্রাম শুরু হয় ।উত্তরপ্রদেশের সনভদ্র জেলার সন্নগর গ্রামের বাসিন্দা বিফনি দেবী।এপ্রিল মাসেই এই এলাকা কে খরা কবলিত এলাকা বলে ঘোষনা করেছে ইউপি সরকার।
এই গরমেও বিফনি ও তাঁর গ্রামের অন্যান্য মহিলারা প্রতিদিন সকালে প্রায় আট কিলোমিটার পথ হেঁটে জল সংগ্রহ করতে যান।কাছাকাছি একটি শুকিয়ে যাওয়া জলস্রোত থেকে তাঁরা জল সংগ্রহ করেন।মাঝে মধ্যে জলের জন্য তাঁরা হাত দিয়েই কয়েক ফুট মাটি খুঁড়ে নেন।সন্নগর,সনভদ্র জেলার মধ্যে একটি দূরবর্তী গ্রাম - এটি রাজধানী লখনউ থেকে প্রায় 450 কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।
সাধারণ দিনে বিফনি তাদের তিন জনের পরিবারের জন্য দিনে দুইবার এই পথ অতিক্রম করে প্রায় 20 লিটার জল সংগ্রহ করে আনেন।এইটুকু জল শহরের শৌচালয় দুই তিন বার ব্যবহার করলেই শেষ হয়ে যায়। অথচ 1,200 জনের এই গ্রামে না আছে কোন হাত পাম্প অথবা নলের মাধ্যমে জল সরবরাহেরও কোন ব্যবস্থা নেই।
বিফনি দেবীর কথায়, ‘সরকার যদি আমাদের জন্য অন্তত একটা হাত পাম্পের ব্যবস্থাও করে দিত তাহলে আমার মত বয়স্ক মানুষদের একটু জলের জন্য এত পথ হাঁটতে হত না। বারবার উঁচু নীচু রাস্তায় হেঁটে যাওয়া একটা বড় সমস্যা।’
সরকারের দাবি,ঐ অঞ্চলে হাত পাম্প বসানো যাচ্ছে না কারণ ওখানকার ভূগর্ভস্থ পানির স্তর খুবই কম, আর গত বছর তুলনামূলক ভাবে বৃষ্টিপাতের পরিমাণও কম ছিল।
সনভদ্রের জেলা ম্যাজিস্ট্রেট বলেছেন- “বড় সমস্যা হচ্ছে এখানকার অনেক গ্রামেই জলের স্তর এত কমে গেছে যে আমরা সেখানে কাজ করার জন্য স্বাভাবিক হাত পাম্প বসাতে পারছিনা। তবে, আমরা এই ধরনের জায়গায় গভীর খননের মাধ্যমে জল সরবরাহ করার চেষ্টা করছি "।
চার বছর আগে,সনভদ্র সহ ভারত সরকার উত্তর প্রদেশের 10 টি পূর্বাঞ্চলীয় জেলায় গ্রামীণ জল সরবরাহ প্রকল্পের জন্য একটি বিশ্বব্যাংকের তহবিল অনুমোদন করেছিল। এই কাগজ অনুযায়ী, 30 টি জায়গায় নল দ্বারা জল সরবরাহের পরিকল্পনা করা ছিল এবং 70 টি খুব ছোট অঞ্চলে সৌর শক্তি দ্বারা পরিচালিত জল সরবরাহের কথা উল্লেখ ছিল । কিন্তু এই অনুমোদন অনুযায়ী মাত্র অর্ধেক সংখ্যক গ্রামেই কাজ হয়েছে।
সরকার বলছে যে প্রায় 400 টি ট্যাঙ্কার দূরবর্তী গ্রামে জল সরবরাহ করছে এবং বর্ষার সময় জল ধরে রাখার জন্য প্রায় 1,000 এর ও বেশি পুকুর খোঁড়া হয়েছে। তবে এই পরিস্থিতিতে গ্রামবাসীদের অবস্থা খুবই হতাশাজনক বলে মনে হচ্ছে।