সংবিধানের ৩৭০ ও ৩৫এ ধারা তুলে নেওয়ায় ‘স্পেশাল স্ট্যাটাস' হারিয়েছে জম্মু ও কাশ্মীর। এই অবস্থায় যদি দেশে নির্বাচন হত, তাহলে বিপুল জয় পেত বিজেপি। কেবল সদ্যসমাপ্ত নির্বাচনের ফলই নয়, ভেঙে যেত অন্য রেকর্ড। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধির মৃত্যুর পরে হওয়া লোকসভা নির্বাচনে ইন্দিরা-পুত্র রাজীব গান্ধি যে বিপুল জয় পেয়েছিলেন, সেই রেকর্ডও নস্যাৎ করে দিত নরেন্দ্র মোদির দল। তেমনটাই মনে করছেন প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী যশোবন্ত সিনহা। প্রাক্তন বিজেপি নেতা ৮১ বছরের প্রবীণ যশোবন্ত নির্বাচনের কয়েক মাস আগেও নরেন্দ্র মোদির সমালোচনা করেছিলেন। কিন্তু সোমবার জম্মু ও কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা রদ করে রাজ্যকে দু'টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে ভাগ করার বিল পাশ প্রসঙ্গে তিনি উচ্ছ্বসিত।
কাশ্মীর ইস্যু নিয়ে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধি যা বললেন জেনে নিন এবার
এই সিদ্ধান্তকে ‘বিশুদ্ধ রাজনৈতিক পদক্ষেপ' বলে জানিয়েছেন যশোবন্ত সিনহা। তাঁর কাছে জানতে চাওয়া হয়, ৩৭০ ধারা রদের পরের দিনই যদি দেশে নির্বাচন হত, তাহলে বিজেপি কত আসন পেত। NDTV-কে যশোবন্ত জানান, ‘‘ওরা রাজীব গান্ধির রেকর্ডও ভেঙে দিত।''
১৯৮৪ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধি তাঁর দেহরক্ষীর গুলিতে নিহত হন। ওই মৃত্যুর পরে দেশজুড়ে যে সহানুভূতির হাওয়া বয়ে গিয়েছিল তার ফলে রেকর্ড সংখ্যক আসনে জয়ী হয়েছিল রাজীব গান্ধির কংগ্রেস। ৪০০-রও বেশি আসনে জয়ী হয়েছিল তারা।
১৯৭৫ সালে ‘জরুরি অবস্থা' ঘোষণার মতো: ৩৭০ ধারা বাতিল প্রসঙ্গে ঐতিহাসিক রামচন্দ্র গুহ
যশোবন্ত জানাচ্ছেন, ‘‘ভারত সরকার ৩৭০ ও ৩৫এ ধারা নিয়ে যা করেছে, তা বিশুদ্ধ রাজনীতি... ভারতের কিছু অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ রাজ্যে নির্বাচন হবে শীঘ্রই। এবং এই সবকিছুই করা হয়েছে ওই নির্বাচনগুলি জিতবার জন্য।''
এই সিদ্ধান্তের সঙ্গে উঠে আসছে ২০১৬ সালের নোটবন্দি প্রসঙ্গও। সেই সময় এই পদক্ষেপের নিন্দা করেছিলেন বহু অর্থনীতিবিদ। কিন্তু ভোটারদের কাছে এই বার্তা পৌঁছে ছিল যে, এর ফলে কালো টাকা উদ্ধার সম্ভব হবে।
যশোবন্দ এপ্রসঙ্গে জানাচ্ছে, ‘‘নোটবন্দিও কিন্তু অর্থনৈতিক পদক্ষেপ ছিল না। ওটাও ছিল রাজনৈতিক পদক্ষেপ। এটাও তাই। জম্মু ও কাশ্মীরের সঙ্গে এর কোনও সম্পর্ক নেই।''
সোমবার জম্মু ও কাশ্মীরের ‘স্পেশাল স্ট্যাটাস' তুলে নিতে পদক্ষেপ করেছে সরকার। রাজ্যকে দু'টি কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলে ভাগ করার বিল পেশ করা হয়েছে।
কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়েছে, এমনটা করার পিছনে আসল উদ্দেশ্য হল, কাশ্মীরকে সন্ত্রাসমুক্ত করা। কিন্তু কংগ্রেস ও অন্যান্য বিরোধী দলের বক্তব্য, এতে ওই রাজ্যে আরও অস্থিরতা বাড়বে।