জাকির নায়েক ২০১৬ সালে ভারত থেকে পালিয়ে এসে মালয়েশিয়ার স্থায়ীভাবে বসবাসের অনুমতি পেয়েছিলেন
নয়া দিল্লি: সন্ত্রাসবাদি কার্যকলাপ এবং আপত্তিকর ভাষণের মাধ্যমে উগ্রপন্থাকে প্ররোচিত করার অভিযোগে ভারতের ওয়ান্টেড তালিকায় থাকা ইসলামিক প্রচারক জাকির নায়েকের (Zakir Naik) ভাষণ নিষিদ্ধ হল মালয়েশিয়াতেও। "জাতীয় সুরক্ষা" স্বার্থেই ওই ইসলামি ধর্মপ্রচারকের ভাষণ নিষিদ্ধ করা হল সে দেশে । মালয়েশিয়ায় মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠদের মধ্যে বসবাসকারী হিন্দু ও চিনা সম্প্রদায়ের বিষয়ে উস্কানিমূলক মন্তব্য করে শান্তি বিঘ্নিত করতে চাইছেন তিনি, এই অভিযোগেই জাকির নায়েককে স্থানীয় পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করে এবং তাঁর বিরুদ্ধে উত্তেজক বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়। ৩ অগস্ট, জাকির নায়েক বলেন যে মালয়েশিয়ার হিন্দুরা ভারতের মুসলমানদের চেয়ে "১০০ গুণ" বেশি অধিকার পেয়েছে। তিনি চিনা মালয়েশিয়ার সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধেও সংবেদনশীল মন্তব্য করেন। যদিও তিনি সেই মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে ক্ষমা চান, দাবি করেছেন যে তাঁর মন্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা করা হয়েছে।
জাকির নায়েক তাঁর বিবৃতিতে আরও বলেন, "কোনও ব্যক্তি বা সম্প্রদায়কে আঘাত করা কখনই আমার উদ্দেশ্য ছিল না, এটি ইসলামের মূল তত্ত্বগুলির পরিপন্থী এবং আমি এই ভুল বোঝাবুঝির জন্য আন্তরিকভাবে ক্ষমাপ্রার্থনা করতে চাই। "
জাকির নায়েক ৯/১১-এর সন্ত্রাসবাদি হামলাকে “ভিতরের ব্যাপার” বলে চিহ্নিত করে বিতর্কে জড়ান। এরপরেই তিন বছর আগে ভারত ছেড়ে পালিয়ে গিয়ে মুসলিম অধ্যুষিত মালয়েশিয়ায় চলে যান, যেখানে তাঁকে পূর্ববর্তী সরকার স্থায়ীভাবে বসবাসের অনুমতি দেয়।
গত বছরের জুলাই মাসে ভারত মালয়েশিয়ার কাছে জাকির নায়েকের প্রত্যর্পণের দাবি জানিয়ে একটি অনুরোধ করে। তবে সেইসময় মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মাহাথির বলেছিলেন যে "যতক্ষণ তিনি কোনও সমস্যা তৈরি না করছেন" ততক্ষণ তাঁকে প্রত্যর্পণের কথা ভাববে না সরকার।
কিন্তু বর্তমানে জাকির নায়েকের উস্কানিমূলক বক্তব্যে বেজায় চটেছে মালয়েশিয়ার সরকার। সে দেশের প্রধানমন্ত্রী বলেন "কেউ (ধর্মীয়ভাবে) প্রচার করতেই পারেন, কিন্তু তিনি তা করছিলেন না। তিনি চিনাদের চিনে ফিরে যাওয়ার কথা এবং ভারতীয়দের ভারতে ফিরে যাওয়ার কথা বলে উস্কানি দিচ্ছিলেন। আমার সরকার কখনও এ জাতীয় কথা বলেনি। এটা রাজনীতি হচ্ছে," ।
মালয়েশিয়ার সরকার এর আগে জাকির নায়েকের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করতে অনিচ্ছুক বলে মনে হয়েছিল। কিন্তু এবার ওই মুসলিম ধর্ম প্রচারকের বিরুদ্ধে কড়া হচ্ছে সে দেশের সরকার।
মালয়েশিয়ার ৩২ মিলিয়ন মানুষের মধ্যে মুসলমানরা ৬০ শতাংশ বাকি অংশটির মধ্যে বেশিরভাগই হয় চিনা নয়তো ভারতীয়, যাদের মধ্যে আবার বেশিরভাগই হিন্দু।