This Article is From Aug 01, 2019

“আমি আহত! কিন্তু আমরা তো গরিব...” খাবারের ধর্ম প্রসঙ্গে জোমাটোর মুসলিম ডেলিভারি কর্মী

“খাবারের কোনও ধর্ম হয় না। খাবার নিজেই একটা ধর্ম,” পালটা টুইট করে গ্রাহক অমিত শুক্লার অযৌক্তিক দাবি নাকচ করে দিয়েছে জোমাটো।

“আমি আহত! কিন্তু আমরা তো গরিব...” খাবারের ধর্ম প্রসঙ্গে জোমাটোর মুসলিম ডেলিভারি কর্মী

আমরা আমাদের মূল্যবোধের পথে আসে এমন কোনও ব্যবসা হারাতে হলেও আমাদের দুঃখ নেই,” টুইট করেন দীপিন্দর

হাইলাইটস

  • জবলপুরের জোমাটো কর্মী ফৈয়াজ এখন আলোচনার মধ্যমণি
  • মুসলিম বলে তাঁর ডেলিভারি বাতিল করে দেন গ্রাহক অমিত শুক্লা
  • আমরা তো গরীব, তাই সহ্য করতে হয়; জোমাটো কর্মী ফৈয়াজ
নিউ দিল্লি:

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় যখন জবলপুরে অনলাইনে খাবার অর্ডার পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব পেয়েছিলেন জোমাটো কর্মী ফৈয়াজ (Zomato employee Faiyaz), তখনও ভাবতে পারেননি এই অর্ডারই তাঁর জীবনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হয়ে উঠবে। আর পাঁচটা দিন যেমন বাড়ি বাড়ি গিয়ে খাবার পৌঁছে দেন, এটিকেও সাধারণ ডেলিভারির চেয়ে বেশি কিছু মনে করেননি ফৈয়াজ। তবে দুই ঘন্টা পরেই বদলে যায় সমস্ত ঘটনা পরম্পরা। গ্রাহক অধিকার এবং ধর্মীয় পার্থক্য নিয়ে দেশ জুড়ে উত্তাল হয়ে ওঠা বিতর্কের কেন্দ্র হয়ে ওঠেন জোমাটোর ডেলিভারি পার্সন ফৈয়াজ। 

খাবার পৌঁছে দেবেন মুসলিম ব্যক্তি, তাই বাতিল অর্ডার! পালটা জবাবে মন জিতল জোমাটো!

গ্রাহক অমিত শুক্লা (Amit Shukla) খাবার অর্ডার করেও তা বাতিল করে দেন কারণ ডেলিভারি পার্সন ফৈয়াজ একজন ‘অ-হিন্দু' আরও স্পষ্টভাবে বললে একজন মুসলিম তিনি। ডেলিভারি এক্সিকিউটিভের ধর্ম অবশ্য খালি পেটের থেকেও বেশিই গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়েছে অমিতের কাছে। তাই মুসলিম ব্যক্তির আনা খাবার মুখে রুচবে না তাঁর, বদলে দিতে হবে ডেলিভারি পার্সনকে। এমনটাই দাবি ছিল তাঁর। তিনি টুইট করেন, “জোমাটোইন (@ZomatoIN)-এর একটি অর্ডার বাতিল করলাম। ওরা আমার খাবার পৌঁছে দেওয়ার জন্য একজন অ-হিন্দু (non-Hindu) রাইডারকে বরাদ্দ করেছিল। তারা জানিয়েছে যে তারা চালক পরিবর্তন করতে পারে না এবং বাতিল করার টাকাও ফেরত দিতে পারবে না। আমি জানিয়েছিলাম, আমি যে ডেলিভারি নিতে চাই না, সেই ডেলিভারি নিতে আপনারা আমাকে বাধ্য করতে পারেন না, আমি রিফান্ডও চাই না। অর্ডার বাতিল করে দিন।”

জোমাটো (Zomato) এই ঘটনায় যা উত্তর দিয়েছে তা সারা দেশেই সাড়া ফেলে দিয়েছে। “খাবারের কোনও ধর্ম হয় না। খাবার নিজেই একটা ধর্ম,” পালটা টুইট করে গ্রাহক অমিত শুক্লার অযৌক্তিক দাবি নাকচ করে দিয়েছে জোমাটো।

সামান্য একটা খাবার ডেলিভারি করতে যাওয়ার ঘটনা নিয়ে এতকিছু হয়ে যেতে পারে তা অবশ্য ঘুণাক্ষরেও ভাবেননি ফৈয়াজ। তিনি বলেন, “এমন ঘটনায় আমি আহত, তবে আমি কী করতে পারি... আমরা দরিদ্র মানুষ, আমাদের এই জাতীয় ব্যবহারের সঙ্গে মানিয়ে নিতে হচ্ছে।” 

প্রতিবন্ধকতাকে হারিয়ে খাবার পৌঁছে দেন এই ব্যক্তি; বিশেষ উপহার দিল জোমাটো কর্তৃপক্ষ

জোমাটোর প্রতিষ্ঠাতা দীপিন্দর গোয়েল (Zomato founder Deepinder Goyal) অবশ্য ডেলিভারি এক্সিকিউটিভের পাশেই দাঁড়িয়েছেন। “আমরা ভারতের ধারণা এবং আমাদের সম্মানীয় গ্রাহক এবং অংশীদারদের বৈচিত্র্য বিষয়ে গর্বিত। আমরা আমাদের মূল্যবোধের পথে আসে এমন কোনও ব্যবসা হারাতে হলেও আমাদের দুঃখ নেই,” টুইট করেন দীপিন্দর। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রামনাথ আটওয়ালেও অমিত শুক্লার এই মনোভাবকে ‘সমাজে ফাটল সৃষ্টির প্রয়াস' বলেই  মনে করেছেন।

তবে যার মনোভাব নিয়ে এত্ত বিতর্ক সেই অমিত শুক্লা অবশ্য নিজের ‘ধর্ম' বাঁচাতে যুক্তিহীনতাকেই আঁকড়ে রয়েছেন এখনও। একটি নিউজ চ্যানেলকে তিনি বলেন, “আমার মত প্রকাশের এবং ধর্মের স্বাধীনতা কি ভারতের ধারণার আওতায় পড়ে না? পবিত্র শ্রাবণ মাস চলছে, এবং এটি ব্যক্তিগত পছন্দের বিষয়।”

অন্যদিকে, জম্মু ও কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ এবং প্রাক্তন প্রধান নির্বাচন কমিশনার এসওয়াই কুরেশি সহ অনেকেই প্রশংসায় ভরিয়ে তুলেছেন এই অনলাইন খাবার ডেলিভারি সংস্থাকে। ওমর আবদুল্লাহ টুইট করেছেন, “শ্রদ্ধা। আমি আপনাদের অ্যাপ্লিকেশনটি বেশ ভালোবাসি। এর পিছনে থাকা সংস্থার প্রশংসা করার জন্য এমন একটা কারণ দেওয়ার জন্য আপনাদের ধন্যবাদ।”

.